ঢাকা , শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ , ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উত্তরের জনপদে শীতের আমেজ

সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বদলগাছীতে, পঞ্চগড়-দিনাজপুরেও জেঁকে বসেছে শীত

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ১৭-১১-২০২৪ ০৩:৪৮:৪৯ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ১৭-১১-২০২৪ ০৩:৪৮:৪৯ অপরাহ্ন
সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বদলগাছীতে, পঞ্চগড়-দিনাজপুরেও জেঁকে বসেছে শীত ​ফাইল ফটো
উত্তরের জেলাগুলোতে শুরু হয়েছে শীতের অনুভূতি। বিশেষ করে পঞ্চগড়, দিনাজপুর, নওগাঁ ও ঠাকুরগাঁওয়ে জেকে বসেছে শীত। এই অঞ্চলে এখন শীতের ইমেজ পুরোপুরি শুরু হয়ে গেছে। দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকলেও সন্ধ্যার পর রাড়ছে শীত। মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত কুয়াশা আচ্ছাদিত থাকছে পথঘাট। ক্রমশ কমছে তাপমাত্রাও। ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতের কারণে খেটে খাওয়া ও নিম্ন আয়ের মানুষ কাজে যেতে পারছেন না। দিনের বেলাতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে করছে যানবাহন। রাতের বেলা বৃষ্টির মতো টিপটিপ করে পড়ছে কুয়াশা। এ অঞ্চলের বেশিরভাগ জেলাতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে ১৩ থেকে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এরই মধ্যে গতকাল রোববার সকালে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে নওগাঁর বদলগাছীতে। রোববার (১৭ নভেম্বর) প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর ও ডেস্ক রিপোর্টে বিস্তারিত-

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তবে সারা দেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। এ ছাড়া শেষ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে।  

আগামীকাল মঙ্গলবার ( ১৮নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এ ছাড়া শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং দেশের অন্যত্র কোথাও কোথাও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। 
আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানিয়েছেন, ভোরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে নওগাঁর বদলগাছীতে, ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া রাজশাহী, রংপুর বিভাগে বিভিন্ন স্থানে তাপমাত্রা নেমে এসেছে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে। ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

পঞ্চগড় প্রতিনিধি জানান, উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে শীতের প্রকোপ দিন দিন বাড়ছে। হিমালয়ের কাছাকাছি অবস্থানের কারণে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় এখানে শীতের আগমন অনেক আগে থেকেই টের পাওয়া যায়। ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন পঞ্চগড়ের জনপদ যেন শীতের আগমনী বার্তায় সিক্ত। গতকাল সকালে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জানিয়েছে, পঞ্চগড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা শনিবার ছিল ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ জানিয়েছেন, কয়েকদিন ধরেই তাপমাত্রার ধারা নিম্নমুখী। সামনের দিনগুলোতে এই তাপমাত্রা আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে। সকালের সূর্য ওঠার পরেও ঘন কুয়াশার কারণে উষ্ণতা ছড়াতে পারছে না। হিম বাতাস আর শিশিরে শীতের অনুভূতি তীব্র হচ্ছে। হালকা কুয়াশার চাদরে ঢাকা প্রকৃতি যেন শীতের আগমনী পরিবেশকে আরও মনোমুগ্ধকর করে তুলেছে। সবুজ ঘাসের ডগায় জমে থাকা শিশিরবিন্দু সূর্যের আলোয় ঝলমল করে উঠছে। 

স্থানীয়দের মতে, সন্ধ্যার পর থেকেই হিমেল হাওয়ার দাপট বাড়ছে। রাতে কাঁথা-মুড়ি দিয়ে ঘুমাতে হচ্ছে। বরফে ঢাকা হিমালয়ের কাছাকাছি হওয়ায় পঞ্চগড় এবং এর আশেপাশের এলাকায় শীতের প্রভাব বেশি। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই অঞ্চলে শীতের প্রকোপ চরমে থাকে। শীতের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন লেপ-তোষক তৈরির কারিগররা। শীতের আগমনের দু-এক মাস আগে থেকেই তাদের কর্মব্যস্ততা বেড়ে যায়। একইসঙ্গে বাজারে শীতের কাপড়ের চাহিদাও বেড়েছে। দোকানে দোকানে নতুন শীতের পোশাক তোলার কাজ চলছে। 

এদিকে, কৃষকরাও শীতকে উপেক্ষা করে ধানক্ষেতে কাজ করছেন। মাঠে শিশির ভেজা প্রকৃতি আর হিমেল বাতাসের মধ্যেই তারা তাদের দৈনন্দিন কাজ সম্পন্ন করছেন। প্রকৃতির এই মনোমুগ্ধকর পরিবেশের সঙ্গে শীতের তীব্রতাও দিন দিন বাড়ছে। পঞ্চগড়ের শীত শুধু প্রকৃতির পরিবর্তন নয়, স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য নতুন প্রস্তুতির বার্তা। শীতের সকালের এই পরিবেশ উপভোগ করার পাশাপাশি শীত মোকাবিলায় নানা প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে।

দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, কার্তিকের শুরু থেকে শীতের আমেজ বইতে শুরু করেছে উত্তরের জেলা দিনাজপুরে। মাঝে মধ্যেই ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে চারিদিক। হিমালয়ের কাছাকাছি হওয়ায় এই জেলায় শীতের প্রকোপ তুলনামূলক থাকে বেশি। গতকাল দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। 

ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতের কারণে খেটে খাওয়া ও নিম্ন আয়ের মানুষ কাজে যেতে পারছেন না। দিনের বেলাতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে করছে যানবাহন। রাতের বেলা বৃষ্টির মতো টিপটিপ করে পড়ে কুয়াশা। গত তিন দিন ধরে দিনাজপুরের শীতের তীব্রতা বাড়ছে। এ বিষয়ে দিনাজপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ তোফাজ্জল হোসেন জানিয়েছেন, এখন প্রতিদিনই শীতের তীব্রতা বাড়বে। সেই সঙ্গে বৃদ্ধি পাবে ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়া। সকাল ৬টায় দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৪.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


বাংলা স্কুপ/ ডেস্ক/ এনআইএন/এসকে


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ